সংবাদ বিভাগ: টাকা-আত্মসাতের-অভিযোগে-ধর্মঘট-টেকনাফ-স্থলবন্দরের-শ্রমিকদের
বন্দরের গেটে রবিবার সকাল থেকে মানববন্ধন করেন শ্রমিকরা। ছবি: নিউজবাংলা
টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শ্রমিকদের একটি অংশ পণ্য খালাস বন্ধ রেখেছে। তবে মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানি কার্যক্রম চলছে। কী কারণে ধর্মঘট ডেকেছে, সে বিষয়ে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’
কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে সাবেক আলোচিত এমপি আবদুর রহমান বদির প্রভাব দেখিয়ে ১৬ বছর ধরে শ্রমিকদের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ধর্মঘট ডেকে পণ্য খালাস বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা।
বন্দরের গেটে রবিবার সকাল থেকে মানববন্ধন করেন শ্রমিকরা। তবে মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানির কার্যক্রম চালু রয়েছে।
টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শ্রমিকদের একটি অংশ পণ্য খালাস বন্ধ রেখেছে। তবে মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানি কার্যক্রম চলছে। কী কারণে ধর্মঘট ডেকেছে, সে বিষয়ে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’
সকাল থেকে বাণিজ্যঘাটে আমদানিকৃত মালামাল পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। এ ঘাটে শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরির দাবিতে বন্দরের গেটে মাথায় লালকাপড় বেঁধে মানববন্ধন করছেন। এতে পণ্যবাহী বোট ঘাটে নোঙর করে পড়ে আছে।
স্থলবন্দরের শ্রমিক আবুল মনসুর বলেন, ‘আমরা সারা দিন কাজ করে ন্যায্য মজুরি পাচ্ছি না। তাই আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। মূলত মাঝিরা ট্রাকপ্রতি সাত হাজার টাকা করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করলেও আমাদের পাঁচ হাজার টাকা করে মজুরি দিচ্ছে।
‘তা ছাড়া সরাসরি বোট থেকে পণ্য গুদামে খালাস করলে মজুরি দিচ্ছে না, যা আমরা আগে থেকে আদায় করতাম। এতে করে প্রকৃত শ্রমিকরা তাদের মজুরি না পেলেও ঠিকই লাভবান হয় মাঝি সিন্ডিকেট। এমনকি উক্ত টাকার এক অংশ নিয়মিত সাবেক এমপি বদির কাছে পৌঁছে যেত।’
ওই সময় প্রতিবাদী শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাথার ঘাম পায়ে ফেলায় দেশের রাজস্ব আসে। নিজেদের জীবন-জীবিকার তাগিদে কাজ করলেও দিন শেষে বন্দরের মাঝি সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা আমাদের পরিশ্রমের টাকাগুলো ভাগ-বাঁটোয়ারা করে হাতিয়ে নেয়।
‘আমরা যদি এর প্রতিবাদ করি, বন্দর থেকে আমাদের বের করার হুমকি দিত মাঝিরা। আমাদের দাবিগুলো না মানলে প্রয়োজনে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।’
শ্রমিক আবদুস শুক্কুর বলেন, ‘টেকনাফ বন্দরের সৃষ্টি থেকে আমি শ্রমিক হিসেবে কাজ করছি। এ বন্দরে আজগর মাঝিসহ ১২ জন মাঝি রয়েছে। তাদের কাছ থেকে কোনো দিন আমরা সহযোগিতা পাইনি।
‘মাঝিদের শ্রমিকদের টাকার কথা বলতে গেলে সিন্ডিকেট চক্রটি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির ভয় দেখাত, যার কারণে আমরা অসহায় হয়ে শ্রমের টাকা না নিয়ে বাড়ি চলে যেতাম।’
এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিক নেতা মো. আজগর মাঝিকে ফোন করে পাওয়া যায়নি।
আরেক মাঝি মো.করিম বলেন, ‘শ্রমিকরা মজুরি বাড়ানোর দাবিতে কাজ বন্ধ রেখেছেন, কিন্তু ব্যবসায়ীরা মজুরি না বাড়ালে মাঝিরা কীভাবে শোধ করবেন?’
টেকনাফ স্থলবন্দর ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, ‘শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়বে। মূলত এটি মাঝি এবং শ্রমিকদের সমস্যা; আমাদের না।’
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে শ্রমিকদের স্থলবন্দরে কর্মবিরতির খবর শুনেছি। বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’