সে মুখখানি ভুলে গেলে,
পৃথিবী ভুলে যাবে নিজের ঘূর্ণিপথ।
ভুলে ভুলে ভরে যাবে ছায়াতল-সমুদ্র,
পুড়ে যাওয়া ছাই, রংপাল্টে হলুদ হয়ে যাবে শ্মশানে’র মাটিতে৷
তছনছ হয়ে যাবে দ্রাঘিমা, কক্ষপথে’র ছন্দহীনতায়: নিশ্চিহ্ন হবে গ্যালাক্সির গহীণ গহবর- গিলে খাবে দিগন্তভরা সবুজ বিস্তীর্ণ মাঠ, জীবন্ত গাছ, লতাপাতা, শিকড়, সাথে কত ব্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন লাইনের
কবিতার বই, উপন্যাস, গল্পের গোপন গৌরব।
তোমাকে ভুলে গেলে?
আমার কবিতা’রা মরে যাবে।
স্বাধের শব্দঘরে মূর্ছনায় মর্মাহত
অভিমানী শব্দেরা ঝরে যাবে।
তোমাকে ভুলে গেলে!
নীল খামের চিঠি অভিমানে
নিজেকে ভাসাবে দিগন্তের দূর নীলিমায়,
খুঁজে পাওয়া যাবে না আর…
আকাশে চাঁদ উঠে,
পূর্ণিমা জ্যোতি ধীর দখলে পৃথিবীতে নেমে আসে, রাজকুমারী হয়ে এসে নদীর পাড় ঘেষে
আঁচল বিছিয়ে বসে না।
ছলছলে ঘোলা জল, একবারও ছুঁয়ে দেখে না।
আসে না, সে আসে না,
বৃষ্টিতে ভিজে না, ঝড়ো বাতাসে’র উৎশৃংখল চুলের বৈরী তালে তছনছ করে দেয়া নাচ!
কই? নাচে না।
রাজকুমারী হয়ে থাকে না, কলিজার করিডোরে একটি শখের কুঁড়েঘর!
দুঃস্বপ্নেও বাঁধে না।
নি:শ্বাসে শীতল স্পর্শ মিলাবে বলে কেউ ভালোবাসে না!
তবে কেন নিষ্ফল আবদারে
শূন্যবুক ভালোবাসা চায়?
অনাদরেও দু-হাত বাড়িয়ে রাখে?
প্রিয়জনের পাষাণ পাঠশালায়।
রাজকুমারী নিজের রাজ্যে মেঘেদের ডেকে নিয়ে আসে।৷ বুকে’র জমিনে তুমুল বৃষ্টি আর ঝর্ণা, রাজকুমারীর চুল ছুঁয়ে নেমে আসে, ধুঁয়ে আসে, শরীর চুঁয়ে বেয়ে আসা যে জল, কি নামে ডাকি?
অশ্রু নাকি আর্তনাদ?
শিকল পড়ানো যায় না!
ফিরিয়ে আনা যায় না,
চলে যায়, চলে যেতে দিতে হয়।..
আর পথিক?
রাজকুমারী’র পদচিহ্ন ধরে পথেই থেমে আছে।।
অবাক কান্ড??
ফেলে আসা জীবনের সবপথ গেছে ভুলে,
কতকাল ধরে নির্জন একা…
কেউ জানে না? কেন?
হয়তো রাজকুমারীর মায়া,
বুকে’র ব্রহ্মাণ্ডে শব্দসারথী’কে হারিয়ে,
ঐ দূরের দেশে…
কোন এক আধ ফোঁটা রক্তজবার
জমাট লালে নিঃশব্দে গেছে মিশে !!
– রাশিদুল হাসান সুজন