১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বিজয় ২০২৪ -এর ৫ আগস্ট নতুন ভাবে ধুয়ে মুছে ঝকঝকে এক নতুন বাংলাদেশ দেবার প্রত্যয় নিয়ে এই দেশের মানুষের সামনে এসেছে। আর আমরা সেটা সাদরে গ্রহণ করেছি কেননা Everything is fair in love & war কথাটি ছোট বেলা থেকেই শিখে পড়ে বেরে ওঠা জাতি আমরা। অতপর ১৬ ডিসেম্বরকে তো আর প্রথম বিজয় দিবস হিসেবে অগ্রাহ্য করার কোন উপায় নেই, থাকলে অনেকেই সেটি করতে কুণ্ঠিত হতেন না বোধয়। যাক সে কথা এগিয়ে যাক আমার প্রাণের দেশ উন্নত মম শির যেন না পদলিত হয় আর কখনও। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন আর তার চেয়েও বেশি কঠিন উন্নত বিশ্বের কাতারে নিজেদের উত্থাপন করা তবে খুব যে কঠিন তা কিন্তু নয় কেননা ঐ একই ১৬ই ডিসেম্বর বাহরাইন স্বাধীন হয়েছিলো আজ তাঁরা নিজেদের এগিয়ে নিতে পারলে আমাদের অসুবিধা কোথায়? আমরাও নিশ্চই পারবো কিন্তু সেটা পারতে হলে বেশ কিছু ছোট ছোট পরিবর্তন আমাদের সবার আগে করতে হবে যার দিকে আপাতত কাউকে নজর দিতে দেখা যাচ্ছে না। চলুন জেনে আসি কী করা যেতে পারে তার সামান্য কিছু অংশ।
সকল জেলা শহরের সদর হাসপাতাল গুলো আন্তর্জাতিক মানের করেন। এতে চিকিৎসার জন্য অন্য দেশে যেতে হবে না।
সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আরও কঠোর হোন এবং প্রচুর ওরিএন্টেশান ক্যাম্পেইন করেন। যেন এই সহজ সরল… জাতি জানে ও বুঝতে পারে সড়কের নিয়ম ও হর্ণ বাজানোর নিয়ম। কোনটা যথাযথ আর কোনটা অযথা এটা জানলে নিজেদের আন্তর্জাতিক উচ্চতায় নেওয়া সহজ হবে।
খাদ্যদ্রব্য সরাসরি বাজারে তোলার ব্যবস্থা করেন, ঠিক যেভাবে আমার নাটোরে কিছু স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলেপুলেরা করছে। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমবে এবং সব ক্ষেত্রে মানুষকে ঠকানোর প্রবনতা কমবে। এদেশের ৯৮% মানুষ সহজ সরল এবং ঠেলায় পরেই অন্যকে ঠকায়।
স্কুল কলেজের কোচিং সিস্টেম অফ করেন। এতে সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত এবং সুশিক্ষিত নতুন প্রজন্ম আসবে।
হাতে গোনা একজন দুই জনের নাম ও তেরাবেকা ইতিহাস না জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সাত বীর শ্রেষ্ঠ সহ সবার সঠিক ইতিহাস পড়ান। আগের মত ছোট গল্প পড়ানোর ব্যবস্থা করেন। সঠিক হাদিস ও ঈশপের গল্প পড়ান যেন শিশুদের মূল্যবোধ বাড়ে। একটা কিছু শুনলে আর দেখলেই হুড়মুড় করে হুইমজিক্যালি সেদিকে না দৌড়ায় তা হোক সে টিকটক অথবা ইউটিউব কন্টেন্ট মেকিং।
চলচ্চিত্রকে স্বাধীনতা দেন। প্রেক্ষাগৃহ তথা সিনেপ্লেক্স নির্মানে সহযোগিতা করেন। এতে মানুষের বিনোদনের সহজ ব্যবস্থা ও মাধ্যম উন্মুক্ত হবে। সাথে মাদক ও অন্যান্য কার্যকলাপ থেকে তরূণদের সরিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
অসংখ্য খেলার মাঠ ও দফায় দফায় জাতীয় ও লোকাল পর্যায়ের খেলা তথা টুর্নামেন্ট ও প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে দেন। সমস্ত ধরনের খেলা ধূলায় যেন শিশু কিশোর তথা সব স্তরের মানুষ ব্যস্ত হয়ে পরতে পারে সেই ব্যবস্থা করেন। এতে রাজনীতিতে সিংারা খাওয়া ও কিশোর গ্যাং সিস্টেম একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।
ধর্মকে সব চেয়ে উপরে স্থান দিয়েই সকল ধর্মের ও বর্ণের মানুষকে আগে মানুষ বলে জানতে ভাবতে দেখতে শেখান। কোন বক্তব্য কোন পাবলিক উপস্থাপনায় অন্য ধর্মকে ছোট করে কটু কিছু বলা একদম নিষিদ্ধ করে দেন। এতে সবাই স্বাভাবিক ও সুস্থ সমাজ পাবে।
পথের কুকুর বেড়াল গুলোও সৃষ্টিকর্তার ভালোবাসায় সৃষ্ট… সুতরাং তাদের প্রতি সদয় হোন। সরকারি ভাবে এদের বন্ধাকরন ও সহায়তায় কমর্সুচী গ্রহণ করেন। ক্যাম্পেইন শুরু করেন প্রতিটি পারায় মহল্লায়।।নিজেদের বাড়ির উচ্ছিষ্ট খাবার গুলো ডাস্টবিনে না ফেলে একটু কষ্ট করে আলাদা করে রেখে বাসা থেকে বের হবার সময় অন্তত নিজের পারার ও বাড়ির সামনের কুকুর বেড়ার গুলোকে দিয়ে দিক। প্রাণ গুলো বাঁচুক। শিশুরা প্রাণ ও প্রাণীর প্রতি সদয় হয়ে উঠুক।
আরও অসংখ্য বিষয়গুলোর মাঝে এই মাত্র কয়টা বিষয় সবার আগে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে আগামীর জন্য চমৎকার একটা দেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে সহজেই… দূরদর্শী পরিকল্পনাই একমাত্র পারবে এদেশকে আবার সোনার বাংলাদেশ বানাতে।
অন্য বস্ত্র বাসস্থান চিকিৎসা ও আনন্দিত হবার উপকরণ ও কার্যকলাপে সকল শ্রেণীর মানুষকে মনোযোগ দিতে হবে। বিনা কারণে ভাংগাভাংগি হানাহানি কাদা ছিটাছিটি না করে নিজেরা যদি ভালো হয়ে যাই নিজেরা উপরে উঠে যাই তাহলেই অন্যকে ছোট করে নিজেকে বড় সাজতে হবে না। কী বলেন?
-রায়হান শশী,’চলচ্চিত্র নির্মাতা’